মু'মিন জননী উম্মে সালামাহ রদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “অচিরেই এমন কতক শাসকের উদ্ভব ঘটবে, তোমরা...
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন, আমাদের উপর একদল শাসক শাসন করবেন। আমরা তাদের (কিছু) ভালো কাজ পছন্দ করবো; কেননা সেগুলো শরী‘...
ইবন মাস’ঊদ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: سَتَكُونُ أَثَرَةٌ وَأُمُورٌ تُنْكِرُونَهَا» قَالُوا:...
নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন যে, অচিরেই মুসলিমদের মধ্যে এমন একদল লোক তাদের শাসক হবে যারা মুসলিমদের সম্পদ ও অন্যান্য পার্...
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমার এই ঘরে বলতে শুনেছি: “হে আল্লাহ ! যে আমার উম্ম...
মুসলিমদের ছোট বড় যে কোন ধরনের দায়িত্বভার যারা গ্রহণ করেন, চাই তা রাষ্ট্রীয় সাধারণ দায়িত্ব হোক বা আংশিক দায়িত্ব, তাদের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘...
তামীম আদ-দারী রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “নসীহত প্রতিষ্ঠাই দীন।” আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, কার জন্য? তিনি ব...
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, দীন হচ্ছে ইখলাস ও সততার উপর প্রতিষ্ঠিত; যাতে আল্লাহ যেভাবে যা কিছু ফরয করেছেন তা কমতি বা প্রতারণ...
‘আয়িশাহ রদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: একবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন: {هُوَ الَّذِي أَنْزَل...
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াত পাঠ করলেন, যার অর্থ: “তিনিই আপনার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছেন যার কিছু আয়াত ‘মুহকাম’, এগুলো কিতাবের মূল আ...

মু'মিন জননী উম্মে সালামাহ রদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “অচিরেই এমন কতক শাসকের উদ্ভব ঘটবে, তোমরা তাদের (কিছু) কাজ পছন্দ করবে এবং (কিছু) কাজ অপছন্দ করবে। যেজন তাদের ভাল কাজ পছন্দ করল সে মুক্তি পেল এবং যেজন তাদের কে (অন্তর থেকে) অপছন্দ করলো সে নিরাপদ হলো। কিন্তু যেজন তাদের (মন্দ কাজ) পছন্দ করলো এবং অনুরসরণ করলো (সে ক্ষতিগ্রস্ত হলো)।” সাহাবীগণ জানতে চাইল: আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করব না? তিনি বললেন: “না, যতক্ষণ তারা সালাত আদায়কারী থাকবে।”

ইবন মাস’ঊদ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: سَتَكُونُ أَثَرَةٌ وَأُمُورٌ تُنْكِرُونَهَا» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَا تَأْمُرُنَا؟ قَالَ: «تُؤَدُّونَ الحَقَّ الَّذِي عَلَيْكُمْ، وَتَسْأَلُونَ اللَّهَ الَّذِي لَكُمْ “অচিরেই স্বজনপ্রীতি-স্বেচ্ছাচারিতা প্রকাশ পাবে এবং এমন সব কর্মকান্ড ঘটবে যা তোমরা অপছন্দ করবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এমতাবস্থায় আমাদেরকে আপনি কী নির্দেশ করেন? নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে এবং তোমাদের প্রাপ্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে।”

‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমার এই ঘরে বলতে শুনেছি: “হে আল্লাহ ! যে আমার উম্মাতের কর্তৃত্ব লাভকারী যদি তাদের প্রতি রূঢ় আচরণ করে তুমি তার প্রতি রূঢ় হও, আর আমার উম্মাতের কর্তৃত্ব লাভকারী যদি তাদের প্রতি নম্র আচরণ করে,তুমি তার প্রতি নম্র ও সদয় হও।”

তামীম আদ-দারী রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “নসীহত প্রতিষ্ঠাই দীন।” আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, কার জন্য? তিনি বললেন: “আল্লাহর, তাঁর কিতাবের, তাঁর রাসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম সাধারণ জনগণের।”

‘আয়িশাহ রদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: একবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন: {هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ، وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلَّا اللَّهُ، وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِنْ عِنْدِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ} যার অর্থ: “তিনিই আপনার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছেন যার কিছু আয়াত ‘মুহকাম’, এগুলো কিতাবের মূল আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ’, সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে শুধু তারাই ফেৎনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে। অথচ আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তারা বলে: আমরা এগুলোতে ঈমান রাখি, সবই আমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে’; এবং জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।” [সূরা আলে-ইমরান: ০৭]। আয়িশাহ বলেছেন: তারপরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “যখন তুমি কাউকে দেখবে সে এমন কিছুর অনুসরণ করছে, যার মধ্যে অস্পষ্টতা রয়েছে, তাহলে জেনে রাখবে, তারাই হচ্ছে ঐ সমস্ত লোক যাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন- ‘তোমরা তাদের থেকে সতর্ক থাকবে।’”

আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন অন্যায় কাজ দেখতে পাবে, সে যেন উক্ত অন্যায়কে তার হাত দিয়ে পরিবর্তন করে। যদি সে তা করতে সক্ষম না হয়, তবে সে যেন তার জিহ্বা (ভাষা) দ্বারা তা পরিবর্তন করে। যদি সে তাতেও সক্ষম না হয়, তবে সে যেন তার অন্তর দিয়ে [চেষ্টা করে এবং ঘৃণা করে]। আর এটিই হচ্ছে ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর।”

নু‘মান ইবন বাশির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «مَثَلُ القَائِمِ عَلَى حُدُودِ اللَّهِ وَالوَاقِعِ فِيهَا، كَمَثَلِ قَوْمٍ اسْتَهَمُوا عَلَى سَفِينَةٍ، فَأَصَابَ بَعْضُهُمْ أَعْلاَهَا وَبَعْضُهُمْ أَسْفَلَهَا، فَكَانَ الَّذِينَ فِي أَسْفَلِهَا إِذَا اسْتَقَوْا مِنَ المَاءِ مَرُّوا عَلَى مَنْ فَوْقَهُمْ، فَقَالُوا: لَوْ أَنَّا خَرَقْنَا فِي نَصِيبِنَا خَرْقًا وَلَمْ نُؤْذِ مَنْ فَوْقَنَا، فَإِنْ يَتْرُكُوهُمْ وَمَا أَرَادُوا هَلَكُوا جَمِيعًا، وَإِنْ أَخَذُوا عَلَى أَيْدِيهِمْ نَجَوْا، وَنَجَوْا جَمِيعًا». “আল্লাহর নির্ধারিত সীমা প্রতিষ্ঠাকারী (অর্থাৎ সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে বাধাদানকারী) এবং ঐ সীমা লংঘনকারীর (উক্ত কাজ ত্যাগকারীর) উদাহরণ হলো এমন এক সম্প্রদায়ের মত; যারা একটি (দ্বিতলবিশিষ্ট) জাহাজে লটারি করে উঠেছে। সেখানে কিছু লোকের উপর তলায় এবং কিছু লোকের নিচের তলায় স্থান হল। পানির প্রয়োজনে তাদের নিচের তলার লোকদেরকে উপর তলায় যেতে হতো। (একসময়) নিচের তলার লোকেরা বলল: ‘আমরা যদি আমাদের অংশে (নিচের তলায় কোন স্থানে) ছিদ্র করে নেই তাহলে উপর তলার লোকদেরকে কষ্ট দেয়ার দরকার হয় না। তখন যদি উপর তলার লোকেরা তাদেরকে নিজ ইচ্ছা ও কর্মের উপর ছেড়ে দেয়, তাহলে সকলেই (পানিতে ডুবে) ধ্বংস হয়ে যায়। আর যদি উপর তলার লোকেরা তাদের হাত ধরে বাধা দেয়, তাহলে তারা নিজেরাও বেঁচে যায় এবং সকলকেই বাঁচিয়ে নেয়।”

আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে মারফূ‘ হিসেবে বর্ণিত: “যে ব্যক্তি কোনো সৎপথের দিকে আহবান করবে, সে তার অনুসরণকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি কোনো ভ্রষ্টতার দিকে আহবান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।”

আবূ মাস‘ঊদ আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, আমার বাহন ধ্বংস হয়ে গেছে, আপনি আমাকে একটি বাহন প্রদান করুন। তিনি বললেন: “আমার কাছে তো তা নেই।” সে সময় এক ব্যক্তি বললো, আমি এমন এক ব্যক্তির সন্ধান তাকে দিবো যে তাকে বাহন দিতে পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “যে ব্যক্তি কোন উত্তম বিষয়ে পথ প্রদর্শন করে, তার জন্য আমলকারীর সমান সাওয়াব রয়েছে।”

সাহল ইবন সা’দ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, “নিশ্চয় আমি আগামীকাল যুদ্ধের পতাকা এমন এক ব্যক্তিকে দিব, যার হাতে আল্লাহ বিজয় দান করবেন, আর সে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাকে ভালোবাসেন।” অতঃপর লোকেরা এই আলোচনা করতে করতে রাত কাটিয়ে দিল যে, তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তিকে এটা দেওয়া হবে। অতঃপর সকালে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গেল। তাদের প্রত্যেকেরই এই আকাঙ্খা ছিল যে, পতাকা তাকে দেওয়া হোক। কিন্তু তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আলী ইবন আবী তালিব কোথায়?” তাকে বলা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসূল! তার চক্ষুদ্বয়ে ব্যথা হচ্ছে।’ তিনি বললেন, “তাকে ডেকে পাঠাও।” সুতরাং তাকে ডেকে আনা হলো। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চক্ষুদ্বয়ে থুথু লাগিয়ে দিলেন এবং তাঁর জন্য দুআ করলেন। ফলে তিনি এমন সুস্থ হয়ে গেলেন; যেন তার কোনো ব্যথাই ছিল না। অতঃপর তিনি তাঁকে যুদ্ধের পতাকা দিলেন। আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! তারা আমাদের মতো (মুসলিম) না হওয়া পর্যন্ত কি আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়তে থাকব?’ তিনি বললেন, “তুমি প্রশান্ত হয়ে চলতে থাক; যতক্ষণ না তাদের নগর-প্রাঙ্গনে অবতরণ করেছ। অতঃপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান কর এবং ইসলামে তাদের ওপর আল্লাহর যে জরুরী হক রয়েছে তাদেরকে সে ব্যাপারে অবগত করাও। আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহ তাআলা তোমার দ্বারা একটি মানুষকে হিদায়াত করেন, তাহলে তা তোমার জন্য (আরবের শ্রেষ্ঠ সম্পদ) লাল উষ্ট্রী অপেক্ষাও উত্তম।

ইবনু ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের অনুসরণ-অনুকরণ করবে, সে তাদের দলভুক্ত হবে।”

আবু হুরাইরাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক মারফু হিসেবে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের উপর হয়। অতএব তোমাদের প্রত্যেককে দেখা উচিত কাকে বন্ধু বানাবে।”