- কুরআনের মুহকাম আয়াত হচ্ছে: যে আয়াতের অর্থ সুস্পষ্ট এবং বক্তব্য দ্ব্যর্থহীন। আর মুতাশাবিহ হচ্ছে: যা একাধিক অর্থের সম্ভাবনা রাখে এবং চিন্তা-ভাবনা ও
- গভীরভাবে বোঝার প্রয়োজন হয়।
- বক্রতার অধিকারী, বিদ‘আতী ব্যক্তি, যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে সমস্যার উত্থাপন করে এবং তাদের মধ্যে সন্দেহ আরোপ করে, তাদের সাথে মেলামেশার ক্ষেত্রে সতর্কতা রয়েছে এতে।
- আয়াতের শেষে আল্লাহ তা‘আলার বাণী: وما يذكر إلا أولو الألباب যার অর্থ: “এবং জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।” এটি বক্র মানুষিকতার লোকদের জন্য অপমান এবং গভীর জ্ঞান অর্জনকারীদের জন্য প্রশংসা। তথা: যারা উপদেশ গ্রহণ করে না, শিক্ষা নেয় না এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তারা জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোক নয়।
- মুতাশাবিহ বিষয়ের অনুসরণ অন্তরের বক্রতার কারণ।
- মুতাশাবিহ (দ্ব্যর্থবোধক) আয়াতসমূহ, যার অর্থ অনেক সময় বোঝা যায় না, এমন আয়াতগুলোকে মুহকাম (দ্ব্যর্থহীন) আয়াতের দিকে ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যক।
- ঈমানদার এবং পথভ্রষ্টদের পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচন করার জন্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কতিপয় আয়াতকে মুহকাম ও কতিপয় আয়াতকে মুতাশাবিহ হিসেবে নাযিল করেছেন।
- কুরআনে মুতাশাবিহ আয়াত থাকাতে আলিমদের অন্যদের উপরে মর্যাদা প্রকাশ পেয়েছে এবং ‘আকলের কমতি সম্পর্কে অবহিত করার জন্য; যেন তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি আত্মসমর্পণ করে এবং নিজের অক্ষমতা স্বীকার করে।
- ইলমের গভীরতার ফযীলত এবং তাতে দৃঢ় থাকার প্রয়োজনীয়তা।
- وما يعلم تأويله إلا الله والراسخون في العلم এ আয়াতের ” الله” শব্দে ওয়াক্বফ করা(থামা) নিয়ে মুফাসসিরীন আলিমগণ দুটি মত পোষণ করেছেন। যারা ” الله” শব্দে ওয়াক্বফ করেছেন, তাদের নিকটে তাউয়ীল (تأويل) এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- কোন বস্তু সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান এবং তার প্রকৃতি সম্পর্কে জানা, এবং এমন বিষয়সমূহ যা জানার কোন উপায় নেই, যেমন: রূহের কার্যক্রম এবং কিয়ামাত- যেগুলো আল্লাহ তা‘আলা তাঁর স্বীয় ইলমের মধ্যে রেখে দিয়েছেন। আর সুগভীর জ্ঞানের অধিকারীগণ সেগুলো উপরে ঈমান রাখেন এবং এর হাকীকতকে আল্লাহর প্রতি সোপর্দ করেন, এতে করে তারা নিজেরা নিরাপদ থাকেন এবং অন্যদেরকেও নিরাপদ রাখেন। আর যারা ” الله” শব্দে ওয়াক্বফ না করে মিলিয়ে পড়েছেন, তাদের নিকটে তাউয়ীল (تأويل) এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- তাফসীর, ব্যাখ্যাকরণ এবং বক্তব্যকে সুস্পষ্টকরণ। সুতরাং তা আল্লাহ তা‘আলা জানেন, আবার সুগভীর জ্ঞানী ব্যক্তিরাও তা জানেন। আর তাই তারা এগুলোর উপরে ঈমান রাখেন এবং এগুলোকে মুহকাম আয়াতসমূহের দিকে ফিরিয়ে দেন।