আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “হে লোক সকল! আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া অন্য কিছু...
আল্লাহ যাবতীয় দোষ ও দুর্বলতা থেকে পবিত্র। তিনি জামাল, কামাল ও জালালের সিফাতসমূহের সাথে গুনান্বিত। কেউ হারাম বা যাতে সংশয় রয়েছে বা নষ্ট খাওয়া দান ও সাদ...
আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কোন ব্যক্তি যদি কোন অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিকে অব...
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, যে ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে ঋণ পরিশোধে অবকাশ দেয় অথবা তার ঋণের কিছু অংশ মাফ করে দেয়, তাহলে তার...
জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন য...
যে ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয়ে সহজ, অনুগ্রহশীল ও উদার হয়, তার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু‘আ করেছেন। কেননা সে মূল্যের ব্যাপারে ক্রেতার সাথে কঠ...
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পূর্বযুগে কোন এক লোক ছিল, যে মানুষকে ঋণ প্রদান করত। সে...
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্বযুগের কোন এক লোক সম্পর্কে এ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন, যিনি মানুষকে ঋণ প্রদান করত অথবা বাকীতে বিক্রয় করত। সে তার ক...
খাওলা আনসারিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন: “কিছু সংখ্যক মানুষ আল্লাহ তা‘আলার সম্পদ অন্যায়ভাব...
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে মুসলিমদের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা ও তা নাহকভাবে গ্রহণ করা সম্পর্কে সংবাদ দিয়েছেন। এটি অন্যায়ভাবে সম্পদ...

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “হে লোক সকল! আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ মু’মিনদেরকে সেই কাজের নির্দেশ দিয়েছেন, যার নির্দেশ নবীদেরকে দিয়েছেন। সুতরাং মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর এবং সৎকর্ম কর।’ (মু’মিনূন : ৫১) তিনি আরো বলেন, ‘হে বিশ্ববাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কর এবং আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; যদি তোমরা শুধু তাঁরই উপাসনা করে থাক।” (বাকারাহ : ১৭২) অতঃপর তিনি সেই লোকের কথা উল্লেখ ক’রে বললেন, যে এলোমেলো চুলে, ধূলামলিন পায়ে সুদীর্ঘ সফরে থেকে আকাশ পানে দু’ হাত তুলে ‘ইয়া রব্ব্! ‘ইয়া রব্ব্!’ বলে দু‘আ করে। অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোশাক-পরিচ্ছদ হারাম এবং হারাম বস্তু দিয়েই তার শরীর পুষ্ট হয়েছে। তবে তার দু‘আ কিভাবে কবূল করা হবে?”

আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কোন ব্যক্তি যদি কোন অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিকে অবকাশ দেয় বা তার নিকট পাওনা মাফ করে দেয়, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়ায় তাকে ছায়া দিবেন। যে দিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না।”

জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন যে নম্রতার সাথে ক্রয়-বিক্রয় করে ও পাওনা ফেরত চায়।”

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পূর্বযুগে কোন এক লোক ছিল, যে মানুষকে ঋণ প্রদান করত। সে তার কর্মচারীকে বলে দিত, তুমি যখন কোন অভাবগ্রস্তের কাছে (পাওনা আদায়ের জন্য) যাবে তখন তাকে ছাড় দিবে। হয়ত আল্লাহ তা‘আলা এ কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন সে আল্লাহ তা‘আলার সাক্ষাৎ করল, তখন আল্লাহ তাকে ছাড় দিয়ে দেন।”

খাওলা আনসারিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন: “কিছু সংখ্যক মানুষ আল্লাহ তা‘আলার সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে থাকে। কিয়ামত দিবসে তাদের জন্য জাহান্নামের আগুন নির্ধারিত।”

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মহান আল্লাহ বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু সিয়াম স্বতন্ত্র, তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।’ সিয়াম ঢাল স্বরূপ অতএব তোমাদের কেউ যেন সিয়ামের দিনে অশ্লীল না বলে এবং হৈ-হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি সিয়াম রেখেছি।’ সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে, নিঃসন্দেহে সায়িমের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা বেশী উৎকৃষ্ট। সায়িমের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে, তখন সে আনন্দিত হয়; [১] যখন সে ইফতার করে [ইফতারের জন্য সে আনন্দিত হয়]। আর [২] যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, স্বীয় সিয়ামের জন্য সে আনন্দিত হবে।’’ [বুখারী ও মুসলিম, এই শব্দগুলি বুখারীর] বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, ‘সে [সায়িম] পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করে একমাত্র আমারই জন্য। সিয়াম আমার জন্যই। আর আমি নিজে তার পুরস্কার দেব। আর প্রত্যেক নেকী দশগুণ বর্ধিত হয়।’ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আদম সন্তানের প্রত্যেক সৎকর্ম কয়েকগুণ বর্ধিত করা হয়। একটি নেকী দশগুণ থেকে নিয়ে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু সিয়াম ছাড়া। কেননা, তা আমার উদ্দেশ্যে [পালিত] হয়। আর আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। সে পানাহার ও কাম প্রবৃত্তি আমার [সন্তুষ্টি অর্জনের] উদ্দেশ্যেই বর্জন করে।’ সায়িমের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে। একটি আনন্দ হল ইফতারের সময়, আর অপরটি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎকালে। আর নিশ্চয় তার মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক উৎকৃষ্ট।”

আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় সাওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়।”

সাহল ইবনে সা’দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতের মধ্যে এমন একটি দরজা আছে, যার নাম হল ‘রাইয়ান’; সেখান দিয়ে কেবল রোযাদারগণই কিয়ামতের দিনে প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউ সেদিক দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, ‘রোযাদাররা কোথায়?’ তখন তারা দণ্ডায়মান হবে। (এবং ঐ দরজা দিয়ে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে) তারপর যখন তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে, তখন দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর সেখান দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।”

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানগুলোকে শিকলে বন্দী করা হয়।”

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফূ হিসেবে বর্ণিত, “সিয়াম পালনকারী যদি ভুলক্রমে আহার বা পান করে, তাহলে সে যেন তার সাওম পূর্ণ করে নেয়। কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।”

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রামাযানের শেষ দশকের ই‘তিকাফ করতেন। তারপর তাঁর স্ত্রীগণ (সে দিনগুলোতে) ই‘তিকাফ করেছেন। অপর শব্দে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রামাযানে ই‘তিকাফ করতেন। ফজরের সালাত শেষে তিনি ই‘তিকাফের নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করতেন।”

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আল্লাহর ইবাদতের জন্য) যত পরিশ্রম করতেন, অন্য কোনো মাসে তেমন পরিশ্রম করতেন না। (অনুরূপভাবে) রমযানের শেষ দশকে যত পরিশ্রম করতেন অন্য দিনগুলোতে তত পরিশ্রম করতেন না।