যখন সকাল কর ও যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও তখন ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) এবং ‘কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক’ ও ‘কুল আঊযু বিরাব্বিন্নাস’ তিনবার করে পড়। তাহলে প্রতিটি (ক্ষতিকর) জিনিস থেকে নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট হবে।...
আব্দুল্লাহ ইবন খুবাইব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “যখন সকাল কর ও যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও তখন ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) এবং ‘কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক’ ও ‘কুল আঊযু বিরাব্বিন্নাস’ তিনবার করে পড়। তাহলে প্রতিটি (ক্ষতিকর) জিনিস থেকে নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট হবে।”
এটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। - এটি নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। - এটি আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন।
ব্যাখ্যা
এ হাদীসটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা একং একজন মুসলিমকে আল্লাহর যিকিরের প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধানের হিফাযত করবে আল্লাহ তা‘আলা তার হিফাযত করবেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবন খুবাইব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং পরবর্তী সমগ্র উম্মতকে সুরাতুল ইখলাস এবং ‘কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক’ ও ‘কুল আঊযু বিরাব্বিন্নাস’ সকাল-সন্ধ্যা তিনবার করে পড়ার নির্দেশনা দেন। যে ব্যক্তি তা পাঠ করবে আল্লাহ তাকে সব কিছু থেকে সুরক্ষা দিবে। যে মুমিন সব ধরনের অনিষ্ট ও কষ্টদায়ক বস্তু থেকে নিজেদের হিফাযতের চেষ্টা করবে তার জন্য এ হাদীসটির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ফযীলত মহা পরিত্রাণ রয়েছে। এ হাদীসটি তিনটি মহান সূরা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আর তা হলো, (এক)-সূরা আল-ইখলাস অর্থাৎ কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। যে সূরাটিকে আল্লাহ তা‘আলা শুধু তার নিজের জন্য বিষেশিত করেছেন। এ সূরায় যা কিছু উল্লেখ করা হয়েছে সবই তার সাথে খাস ও সম্পৃক্ত। অতঃপর যে ব্যক্তি তা পাঠ করবে আল্লাহর জন্য তার ইখলাস পরিপূর্ণ হবে। তাই সূরাটি ইখলাসপূর্ণ এবং ইসলাস সৃষ্টিকারীও। এ সূরার পাঠক শির্ক থেকে মুক্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন এ সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান, তবে এটা পড়লে এক-তৃতীয়াংশ পড়া হবে না। (দুই)- সূরাতুল ফালাক, এ সূরাতে আল্লাহর সৃষ্ট সকল অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়েছে। রাত এবং তার অন্তভুর্ক্ত সব কষ্টদায়ক বস্তুর অনিষ্ট থেকে, যাদু ও হিংসার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়েছে। সুতরাং একজন মুসলিম যে সব বস্তু থেকে আশ্রয় কামনা করে এবং সতর্ক করে তার অধিকাংশই এখানে একত্র করা হয়েছে। (তিন)- সূরাতুন নাস। এ সূরাটিতে তাওহীদের প্রকারসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। (মানুষের রব) তাওহীদে রবুবিয়্যাহ (মানুষের অধিপতি) তাওহীদুল আসমা ও সিফাতকে শামিল করে। কারণ, মালিক ততক্ষণ পর্যন্ত মালিক হতে পারে না যতক্ষণ না তার নাম ও সিফাতসমূহ পূর্ণতা লাভ না করবে। আর (মানুষের ইলাহ) তাওহীদুল উলূহিয়্যাহকে শামিল করে। (কু-মন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। জিন্ন ও মানুষ থেকে।) তারপর সূরাটিকে শয়তানের কু-মন্ত্রণার অনিষ্টতা থেকে আশ্রয়া চাওয়ার মাধ্যমে শেষ করা হয়েছে।
Share
Use the QR code to easily share the message of Islam with others